শাটল ট্রেনে চড়ে পুরোনো সেই ক্যাম্পাসে এসেছিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। ৫ম বাংলা সম্মেলন উপলক্ষে আগত প্রবীণ শিক্ষার্থীদের এ উৎসব পরিণত হয় নবীন-প্রবীণদের মিলনমেলায়। শনিবার (৭ জানুয়ারি) দিনব্যাপী উদযাপন করা হয় বাংলা সম্মেলন। বিভাগের ১ম ব্যাচ থেকে শুরু করে ৫৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে উৎসব মুখর পরিবেশ তৈরি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জারুলতলায়।
উৎসবে অংশগ্রহণকারীদের কেউ শিক্ষক, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ সাহিত্যিক আবার কেউ সাংবাদিক। এভাবে বিভিন্ন পেশা এবং বয়সের বাংলা বিভাগের সাবেক-বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এ উৎসব পালিত হয়। বাংলা বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থী বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি ও সাহিত্যিক বিমল গুহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাওয়ার পর আর বন্ধুদের সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ হয়নি। কল্পনাও করিনি আমার বন্ধুদের সঙ্গে আবার দেখা হবে। বাংলা সম্মেলনে এসে অনেকের সঙ্গে আবার দেখা হয়েছে। মনে হচ্ছে আমি যেন সেই পুরোনো দিনের ক্যাম্পাস জীবন ফিরে পেয়েছি।
বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত সাহিত্যিক ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, আসলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার পর ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ খুব একটা হয়ে ওঠে না। এ ধরনের উৎসবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ হয়। এটা খুব আনন্দের।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় আনন্দ র্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল পর্ব। র্যালি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জারুলতলায় আয়োজিত হয় আলোচনা সভা। অভিক ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতার।
তিনি বলেন, আজকে ছোট-বড় দেখার সুযোগ নেই। আমাদের সবার আজ একটাই পরিচয়- আমরা বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী। এ বিভাগ আমার প্রাণ। আমি অর্থনীতি ছেড়ে দিয়ে বাংলা বিভাগে এসে ভর্তি হয়েছিলাম। যতদিন আমার প্রাণ আছে ততদিন আমি এ বিভাগ এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালবেসে যাবো।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে ও বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক তাসলিমা বেগম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মহীবুল আজিজ। এতে ২০২১ সালে বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা বিভাগের সাবেক ৩ শিক্ষার্থী কবি বিমল গুহ, কবি আসাদ মান্নান ও কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরীকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকেও সম্মাননা দেয়া হয়। দুপুরের পর স্মৃতিচারণ, কবিতা পাঠ এবং বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্রয়ের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দিনব্যাপী এ আয়োজন।
তথ্যসূত্র: বাংলানিউজ২৪
Leave a Reply